গতকাল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) WBSSC (West Bengal School Service Commission) শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির চাকরি বাতিল মামলার শুনানি হয়ে গেল। ২৬,০০০ শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে আছে এই মামলার ওপর। যদিও গতকালের শুনানিতেও সমাধানের কোনো পথ মেলেনি। সমস্ত প্যানেল বাতিল করে নতুন পরীক্ষার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এক পক্ষের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে। শুনানি সংক্রান্ত সমস্ত খবর পাওয়ার জন্য চোখ রাখুন আজকের প্রতিবেদনে।
সুপ্রিম কোর্টে হয়ে গেল SSC শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত চাকরি বাতিল মামলার শুনানি
পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী গতকাল দুপুর ২টো নাগাদ সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) মহামান্য প্রধান বিচারপতির এজলাসে শুরু হয় এই মামলার আরও একদফা শুনানি। মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Advocate Bikash Ranjan Bhattacharya) দাবি জানান সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার। মাননীয় প্রধান বিচারপতি তাঁর কাছে জানতে চান OMR শিটের নম্বর নিয়ম মেনে প্রকাশিত হয়েছিল কি না। এই প্রশ্নের উত্তরে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন বাবু জানান, নিম্ন আদালতে মামলা করার পর আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী OMR শিট প্রকাশ করা হয়েছিল। এই OMR শিট প্রকাশের ঘটনা মূল ফল প্রকাশের অনেকদিন পরেই হয়েছিল।
মামলাকারীদের আইনজীবীর মতে, এই গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ। সরকারী কোনো পক্ষের কাছেই এই বিষয়ে সঠিক উত্তর নেই। যেখানে রাজ্য সরকার নিয়ম মেনে স্বচ্ছ ভাবে নিয়োগ করতে পারত সেখানে সেটা সঠিক ভাবে হয়নি। তাই নিয়োগ প্রক্রিয়াই বাতিল হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: Career Suggestion: কোন কেরিয়ার ভালো ভারতে বড়লোক হতে হলে? কী করবেন কলেজ পাস করার পর?
আরেক মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম (Advocate Firdous Samim) আদালতকে জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের প্রথম দুটি কাউন্সিলিং প্রক্রিয়া, একই ভাবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগেরও প্রথম দুটি কাউন্সিলিং প্রক্রিয়া নিয়ম মেনে হলেও এরপর যেকটি কাউন্সিলিং হয়েছে সবকটিই হয়েছে নিয়োগ প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর।
আরও পড়ুন: Punjab & Sind Bank BMC Recruitment 2025
বৈধ অবৈধ চাকরীপ্রার্থী আলাদা করা সম্ভব কিনা প্রধান বিচারপতি জানতে চাইলেন
আইনজীবীদের সমস্ত বক্তব্য শোনবার পর মাননীয় প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না (Justice Sanjiv Khanna) ওই আইনজীবীদের কাছে জানতে চাইলেন বৈধ ও অবৈধ চাকরীপ্রার্থীদের বাছাই করা সম্ভব কি না। এর উত্তরে আইনজীবীরা জানান সরকারী কোনো তরফ থেকেই সঠিক তথ্য দেওয়া হয়নি এখনও পর্যন্ত। ফলে সঠিক ভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না কে বৈধ আর কে অবৈধ। আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন যে, যারা এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়েছে তারাও এই দুর্নীতির একটা অংশ। চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে প্রায় ৭-১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। তাই এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি।
প্রধান বিচারপতি নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব কিনা জানতে চান?
শুনানি চলার সময় আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য প্যানেল বাতিল করে নতুন ভাবে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলেন। এরপর মাননীয় প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না (Justice Sanjiv Khanna) পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব কি না জানতে চান। আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন অনেকেই আছেন এমন যারা আবেদনটুকু না করেই চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। তাই যারা ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদন করেছিলেন তাদেরকেই আবার পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হোক। সেক্ষেত্রে বয়সের ছাড় দিতে হবে যাদের বয়স এখন পেরিয়ে গিয়েছে।
পরবর্তী শুনানির দিন কবে ধার্য হল?
আজকের শুনানি শেষ হওয়ার পর আগামী মাসের ৩ তারিখ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হলেও ওইদিন সরস্বতী পুজো থাকায় কিছু আইনজীবীর আপত্তিতে শুনানির পরবর্তী দিন রাখা হয় ১০ই ফেব্রুয়ারি। আপাতত এখনও অনিশ্চিত হয়ে রইল ২৬০০০ শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীর ভবিষ্যৎ।
আরও পড়ুন: TCL Recruitment 2025